নিজ সন্তানকে গলা টিপে হত্যা! কার্টুন দেখতে চাওয়ায়
কার্টুন দেখার জন্য অ্যান্ড্রয়েড মোবাইল চাওয়ায় ৮ বছরের সন্তানকে হত্যা করেছেন এক বাবা। দীর্ঘ ১০ মাসের তদন্তের পর লোমহর্ষক এই হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।
শনিবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) রংপুর পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) কর্তৃক পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। এ ঘটনায় দোষ স্বীকার করে আদালতে স্বীকারোক্তি দিয়েছেন ঘাতক নুর মোহাম্মদ।
বিজ্ঞপ্তি সূত্রে জানা যায়, নীলফামারীর সৈয়দপুরের রসুলপুর রেল কোয়ার্টারে ৫-৬ বছর থেকে পরিবার নিয়ে বসবাস করতেন নুর মোহাম্মদ। ২০২০ সালের ৩ এপ্রিল শুক্রবার জুমার নামাজ শেষে স্ত্রী এবং দুই সন্তান নূপুর (৮) ও আবু সোহানসহ (৭) বাড়িতে টিভি দেখছিলেন নুর মোহাম্মদ। দুই সন্তানের খুনসুটির একপর্যায়ে নূপুর বাবার অ্যান্ড্রয়েড মোবাইলটি কার্টুন দেখার জন্য বারবার চাইলেও তা না দেওয়ায় বাবাকে গালি দেয়।
এতে ক্ষিপ্ত হয়ে নিজের মেয়ের গলা চেপে ধরে নুর মোহাম্মদ। একপর্যায়ে নূপুর নিস্তেজ হয়ে পড়ে ও মৃত্যু হয়। পরে ঘটনাটি আত্মহত্যা বলে চালিয়ে দেওয়ার জন্য নূপুরের লেহেঙ্গার ওড়না দিয়ে কাপড় শুকানোর রশিতে ফাঁসি দিয়ে ঝুলিয়ে রাখেন।
এ ঘটনায় ওই দিন সৈয়দপুর থানা পুলিশ অপমৃত্যু মামলা দায়ের করলে দীর্ঘ ১০ মাস তদন্ত করেও রহস্য উদঘাটন করতে না পারায় তদন্ত কর্মকর্তার আদালতে আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আদালত রংপুর পিবিআইকে মামলার তদন্তভার হস্তান্তর করে। পিবিআই পুলিশ সুপার জাকির হোসেনের নেতৃত্বে তদন্ত কর্মকর্তা নুরে আলম সিদ্দিক ঘটনাস্থল পরিদর্শন ও আলামত সংগ্রহ করে ৮ বছরের শিশুর লেহেঙ্গার ওড়না দিয়ে কাপড় শুকানোর হালকা রশিতে আত্মহত্যার বিষয়টি সন্দেহজনক হওয়ার নুর মোহাম্মদকে আটক করে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ করেন।
একপর্যায়ে নুর মোহাম্মদ মোবাইল চেয়ে বারবার বিরক্ত করা ও গালি দেওয়ায় নিজ সন্তানকে হত্যা করে আত্মহত্যা বলে প্রচারের কথা স্বীকার করে। পরে সৈয়দপুর আমলী আদালত-২-এর সিনিয়র ম্যাজিস্ট্রেট মেহেদী হাসানের কাছে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। বিচারক শুনানি শেষে তাকে জেলহাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
এ বিষয়ে রংপুর পিবিআই পুলিশ সুপার এবিএম জাকির হোসেন বলেন, ঘটনার ১০ মাস পর মামলাটি পিবিআইকে তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হলে মাত্র ১১ দিনের মাথায় আমরা মূল রহস্য উদঘাটনে সক্ষম হই। ঘাতক নুর মোহাম্মদ আদালতের স্বীকারোক্তির পর তাকে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।